সম্পাদকঃ জয় আরিফ।
পদ্মার বুকে তৈরি হওয়া সেতু দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হন বহু মানুষ। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনে দেওয়া এই সেতু এখন একটি পর্যটন স্থানও। আর্থিক, প্রকৌশল এবং রাজনৈতিক ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ২০২২ সালে দীর্ঘতম সেতুটি উদ্বোধন করার সঙ্গে সঙ্গে বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হয় বাংলাদেশের। এ সেতুর জন্য বহুকাল অপেক্ষায় ছিল পদ্মার দুই পারের মানুষসহ সমগ্র দেশবাসী। দীর্ঘ ৯ বছর পর পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্পের সমাপ্তি ঘটে, সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন-টাকার অংকে পদ্মা সেতুর গৌরব বিবেচনা করা যাবে না।
পদ্মা সেতুর আদ্যোপ্যান্ত
পদ্মা সেতুর প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা হয় বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ১৯৯৮-১৯৯৯ সময়ে। ২০০৩-০৫ সময়ে নিজস্ব অর্থায়নে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন করে জাপানের জাইকা। ২০০৬ সালে ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরিকল্পনা করা হয় বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে। ২০০৯-১১ সময়ে বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করা হয়। নিউজিল্যান্ডভিত্তিক মনসেল এইকম সেতুর পূর্ণাঙ্গ নকশা তৈরি করে। জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর জন্য অর্থায়ন করে এডিবি ও বাংলাদেশ সরকার।
২০১২ সালের জুনে বিশ্বব্যাংক তাদের ঋণ বাতিল করে। একই বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৪ সালের ১৭ জুন মূল সেতু নির্মাণ কাজের জন্য চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর সেতুর মূল নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর কাজ উদ্বোধন করেন।
এরপর ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর শেষ স্প্যান বসানো হয়। আর ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের দিন ২৬ জুন পদ্মা সেতু দিয়ে যানচলাচল শুরু হয়।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। মূল সেতুর কাজ করেছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এর অ্যাপ্রোচ সড়ক ১২ দশমিক ১১৭ কিলোমিটার। ভায়াডাক্ট ৩ দশমিক ১৪৮ কিলোমিটার (সড়ক) এবং ৫৩২ মিটার (রেল)।